Official এবং Unofficial মোবাইল চেনার উপায় কী? এদের মধ্যে পার্থক্য কি? আপনার জন্য কোনটি ভালো !

স্মার্ট ফোন বর্তমান সময়ের বিশ্বের জনপ্রিয় আইসিটি ডিভাইস। আর এটা মানতে হবে যে স্মার্ট ফোন ছাড়া এখন একটি দিনের কথা কল্পনা করাও খুব মুশকিল। সে আপনি স্মার্ট ফোন দিয়ে যাই করুন না কেন।

যাই হোক, এখন মুল টপিকে ফিরে আসা যাক। ধরুন আপনি একটি স্মার্টফোন কিনতে চাচ্ছেন। এখন আপনি সর্বপ্রথম কি করবেন? নিশ্চয়ই গুগলে গিয়ে আপনার ফেভারিট ব্র্যান্ড এবং মডেলের স্মার্টফোনের নাম লিখে সার্চ দিলেন৷ সেই স্মার্টফোন এর সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করবেন। এখন অনেক ওয়েবসাইটে আপনি ঐ মডেলের বা ঐ ব্র্যান্ডের স্মার্টফোনের দুই রকমের প্রাইস দেখালো! একটি অফিসিয়াল এবং অপরটি আনঅফিসিয়াল৷

অনেকেই রয়েছেন যারা কিনা এটাই চিন্তা করেন অফিসিয়াল নিব না আনঅফিসিয়াল নিব? অফিসিয়াল এবং আনঅফিসিয়াল ফোনের মধ্যে পার্থক্য কি? এবং আপনাদের কোনটি নেওয়া উচিত। সেটা নিয়ে আলোচনা করব। আর কিভাবে বুঝবো কোনটি Official এবং Unofficial মোবাইল?

আরে চিন্তা করবেন না আমি Labib UR Rahman, আজ আপনাদের সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবো। Official এবং Unofficial মোবাইল চেনার উপায় কী? এদের মধ্যে পার্থক্য কি? আপনার জন্য কোনটি ভালো ! ওনেক বকবক করে ফেললাম, এখন মুল টপিকে ফিরে আসি।

Official এবং Unofficial মোবাইল কি

অফিসিয়াল মোবাইলঃ
তো আমরা অফিসিয়াল মোবাইল বলতে বুঝি যে সব মোবাইল বৈধ ভাবে বাংলাদেশ প্রবেশ করে এবং সরকারকে ভ্যাট এবং ট্যাক্স দিয়ে থাকে সাথে মোবাইলের IMEI নাম্বার BTRC এর তালিকায় জমা থাকে এসব মোবাইলকেই অফিসিয়াল মোবাইল বা Official Mobile বলে
আনঅফিসিয়াল মোবাইলঃ
যে সকল মোবাইল ফোন সরকারী অনুমোদন না নিয়ে চোরাই পথে ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে দেশের বাজারে প্রবেশ করে এবং সরকারী ভাবে রেজিষ্ট্রেশন না করে, ভ্যাট ও ট্যাক্স না দিয়ে, সরাসরি কাস্টমারের কাছে বিক্রয় করা হয়ে থাকে তাকে আনঅফিসিয়াল মোবাইল বা Unofficial Mobile বলে

Official এবং Unofficial মোবাইলের পার্থক্য

অফিসিয়াল মোবাইলঃ
এই সব মোবাইলের অসুবিধার বলতি তেমন কিছু নেই। তবে সুবিধা হলো আপনি এই সব মোবাইলে কাস্টমার কেয়ারের সকল সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। আর এই সব ফোনের বৈধ মালিকানা পাবেন, ফোন হারালে সহজে ট্রাকিং করতে পাবেন, শো-রুম কিংবা কাস্টমার কেয়ারে ওয়ারেন্টি কিংবা সার্ভিসিং এর জন্য সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন, আসল অরিজিনাল ফোন পাবেন।
আনঅফিসিয়াল মোবাইলঃ

এই সব মোবাইলের অসুবিধা বলতে আন অফিসিয়াল ফোনের অনেক কম দামে কিনতে পারবেন তবে এইসব ফোনের কোন সুযোগ সুবিধা পাবেন না। আবার পূর্ণ সার্ভিস ওয়্যারেন্টি তো পাবেনি না। তার সাথে ফোনের বৈধ মালিকানা, ফোন হারালে সহজে পাওয়া, আসল অরিজিনাল ফোন ও লিখিত ভাবে ফোনের মালিকানা ও পাবেন না।

আর সবথেকে বড় অসুবিধা হচ্ছে সরকার আনঅফিসিয়াল মোবাইল বন্ধের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। তাই আনঅফিসিয়াল মোবাইলে সবকার যে কোন সময় নেটওয়ার্ক সিস্টেম বন্ধ করে দিতে পারে। আর এসব মোবাইলের সুবিধা বলতে বলা যায় একটি অফিসিয়াল মোবাইলের যে দাম থাকে তার থেকে ২-৩ হাজার বা তার থেকেও কম টাকায় কেনতে পারবেন এইসব আনঅফিসিয়াল মোবাইল। ও আর একটা কথা তো বলতেই ভুলে গেছি, যে এইসব ফোনে কোন আপডেট পাবেন না।

দামের দিক থেকে Official এবং Unofficial মোবাইল

অফিসিয়াল মোবাইলঃ
এই সব মোবাইলের দাম আপনি অনলাইনে বা ওয়েবসাইটে যে প্রাইজটি দেখে থাকেন সেই প্রাইজেই কিনতো হয়। অফিসিয়াল মোবাইলের দাম কমাতে বা বারাতে পরবেন না। এই সব মোবাইলের দাম নির্ধারিত থাকে।
আনঅফিসিয়াল মোবাইলঃ
একটু আগেই বললাম যে এই সব মোবাইল কোনো প্রকার ভ্যাট বা ট্যাক্স না দিয়েই দেশে প্রবেশ করে। তাই এই সব মোবাইল আপনি ১৫০০-৩০০০ টাকা পর্যন্ত বা তার থেকেও কম দামে কিনতে পারবেন। তবে এটি সম্পুর্ন মোবাইলের মোডেল এবং প্রাইজের উপর নির্ভর করে।

Official ও Unofficial মোবাইল চেনার উপায়

আসলে অফিসিয়াল ও আনঅফিসিয়াল ফোন চেনার অনেকগুলো সহজ উপায় আছে। তাবে আমি এখানে কয়েকটি উপায় স্ক্রিনসর্টের মাধ্যমে আপনাদের বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো।

IMEI নম্বর বের করবেন যেভাবে

প্রথমে আপনার ফোনে *#06# ডায়াল করুন। এখন দেখুন একটি বা দুইটি নম্বর দেখতে পাবেন। এই নম্বর গুলো হলো আপনার ফোনের IMEI কোড। যা দিয়ে আমরা এবার অফিসিয়াল ও আনঅফিসিয়াল ফোন চিনবো। এছাড়াও আপনি আপনার মোবাইলের বক্স টি তে IMEI নম্বর পাবেন।

ডায়ালের মাধ্যমে IMEI নম্বর বের করতে নিচে স্ক্রিনসর্ট লক্ষ করুন বুঝতে সবিধা হবে।

Official ও Unofficial মোবাইল চেনার উপায়

পদ্ধতি নং ১ঃ

এবার IMEI রেব করে imei.info ওয়েবসাইটে গিয়ে মোবাইলের IMEI নম্বর দিলে মোবাইলের সকল ইনফরমেশন চলে আসবে। যেখান থেকে আপনার মোবাইলের ব্রান্ড, মডেল, ভার্সন, ডেট সব আসছে কি-না দেখে মিলিয়ে নিতে পারবেন।

নিচে স্ক্রিনসর্ট লক্ষ করুন বুঝতে সবিধা হবে।

Official ও Unofficial মোবাইল চেনার উপায়

পদ্ধতি নং ২ঃ

এই পদ্ধতিতে আপনি আপনার মোবাইলে ১৫ ডিজিটের যেকোনো একটব IMEI নম্বর কপি করে আপনার মোবাইলের বা আপনার আশেপাশের যেকোনো মোবাইলের New Massage এ গিয়ে লিখবেন KYD এর পর স্পেস আপনার মোবাইলের 15 ডিজিটের IMEI নম্বর টি লিখে Send করুন 16002 এই নম্বরে।

উদাহরণঃ KYD 123456789012345

 √And Send 16002

নিচে স্ক্রিনসর্ট লক্ষ করুন বুঝতে সবিধা হবে।

Official ও Unofficial মোবাইল চেনার উপায়

এরপর আপনার মোবাইলে একটি বিটিআরসি’র থেকে এসএমএস এ জবাব চলে আসবে।

আপনা ফোনটি যদি অফিসিয়াল হয়ে থাকে তবে তারা বলে দেবে যে,

ডিভাইসটির IMEI বিটিআরসি’র ডাটাবেইজে পাওয়া গেছে।

আর যদি আনঅফিসিয়াল হয়ে থাকে তাহলে তারা বলে দেবে যে,

ডিভাইসটির IMEI বিটিআরসি’র ডাটাবেইজে পাওয়া যায়নি, দয়া করে পূর্ণাঙ্গ IMEI (/,#.- সহ অন্যান্য বিশেষ চিহ্ন বাদে শুধুমাত্র ১৫টি নম্বর) লিখে পুনরায় চেষ্টা করুন। KYD <Space> 15 Digit IMEI Number লিখে 16002 তে পাঠিয়ে দিন।

আপনি যখন কোন নতুন ফোন কিনতে যাবেন সে ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম আপনি এই পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করবেন। তবে আপনি অফিসিয়াল ফোন সঠিকভাবে জেনে বুঝে কিনতে পারবেন।

সরকার Unofficial মোবাইল বন্ধ করে দিলে যারা ব্যাবহার করছেন তারা কি করবেন?

এখন যারা আনঅফিসিয়াল মোবাইল ব্যাবহার করছেন বা কিনতে চাচ্ছেন তাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে। যদি সরকার আনঅফিসিয়াল মোবাইলের নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেয় তাহলে কি হবে? এই মোবাইল কি আর ব্যবহার করা যাবে না?

আমার কছে থাকা তর্থ্য মতে, আগে থেকে যারা Unofficial কিনেছে তাদেরকে মোবাইলের নেটওয়ার্ক সিস্টেম পূণরায় চালু করার জন্য সরকারকে ভ্যাট এবং ট্যাক্স দিয়ে মোবাইলটির নেটওয়ার্ক সিস্টেম আবার এক্টিভ করতে হবে। আর এর জন্য আপনার  ৫০০-১৫০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। (শুধু মাত্র ধারনা)

আপনার কোনটি কেনা উচিত

উপরের আলোচনা থেকে এটাতো নিশ্চয়ই বোঝা পেরেছেন যে, Unofficial ফোনের সুবিধা থেকে অসুবিধা বেশি। আনঅফিসিয়াল ফোনে নিরাপত্তা কম থাকে। Official ফোন হারিয়ে গেলে থানায় জিডি করে ফোন ফেরত পাওয়া যায়। ফ্রি সার্ভিসিং ওয়ারেন্টি পাওয়া যায়। কিছু দাম বেশি লাগলেও আমার মতামত আপনার অফিসিয়াল ফোন কেনাই ভালো হবে। 

আর আনঅফিসিয়াল ফোন কিনলে আপনি পুরাতন ফোন যেভাবে চেক করে কিনেন ঠিক সেভাবে র‌্যাম, রোম, ডিসপ্লে, বিল্ট কোয়ালিটি ইত্যাদি ফোন টিকে আনবক্সিং করে চেক করে হবে। আমার মতামত তো দিয়েই দিলাম। এখন বাকিটা আপনার উপর। 

তবে এইটুকু আসা করতে পারি যে, Official এবং Unofficial মোবাইল চেনার উপায় কী? এদের মধ্যে পার্থক্য কি? আপনার জন্য কোনটি ভালো! এইসব নিজেই বুঝতে ও বের করতে পারবেন।

এরপরেও কোনো সমস্যা হলে আমার সাথে Facebook এ যোগাযোগ করতে পারবেনঃ Labib UR Rahman

✰ ধন্যবাদ ✰